বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৩০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড়খারদিয়া গ্রামের ছয়আনি খারদিয়ায় স্থানীয় রাজনৈতিক সহিংসতার জেরে ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার হাশেম মোল্লার ছেলে ইব্রাহিম মোল্লা (২৮), দশআনি খারদিয়া মিয়াপাড়ার জয়নাল মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (৬৪) ও ছয়আনি খারদিয়ার রোকন সিকদারের ছেলে ওয়ার্ড চেয়ারম্যান কাকলীর স্বামী সালাউদ্দিন সিকদার (৪৫) গং দের নেতৃত্বে পরিকল্পিত হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাবলু ফকির নামের এক ব্যাক্তি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই তিনটা বসতবাড়িও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দেওয়কে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলীয় লোকজন মিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাশের গ্রামের হাটের দিন ময়েনদিয়ার হাটে বাবলু ফকির বাজার করতে যায়, সেখানে সুযোগ বুঝে বড়খারদিয়া গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন মেম্বার হাসেম মোল্লার ছেলে ইব্রাহিম মোল্লা (২৮) দশআনি খারদিয়া মিয়াপাড়ার জয়নাল মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (৬৪) ও ছয়আনী খারদিয়ার রোকন সিকদারের ছেলে ওয়ার্ড চেয়ারম্যান কাকলীর স্বামী সালাউদ্দিন সিকদার (৪৫) গং দের নেতৃত্বে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে একই গ্রামের দশআনি খারদিয়ার সিকদার পাড়ার হালিম শেখের ছেলে হোসেন শেখ (৪৫), হান্নান শেখ (৫০), ছয়আনি খারদিয়ার মিয়াপাড়ার মোসলেম খাঁর ছেলে সাবেক মেম্বার ফিরোজ খাঁ (৫০), সহ আলিম, জুয়েল, কামাল, আকুব্বর, খোকন, ছলেমান, ওবায়দুর। মাঝারদিয়া গ্রামের মনজুর ডাকাতের ছেলে রহিম ডাকাত (৩০), দশআনি খারদিয়ার ঠাকুর পাড়ার ছত্তার ঠাকুরের ছেলে মোহাব্বত ঠাকুর (৫৫), আজাদ ঠাকুর (৫০), কালাম শেখের ছেলে রাজিব শেখ (২৮), সজীব শেখ (২৫), ইরাদত মোল্লার ছেলে টিপু মোল্লা (৪৫), রিপন মোল্লা (৩৮), জানু শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর (মিজানুর) শেখ (৩৫)।
একই গ্রামের দশআনি খারদিয়া পশ্চিম ঠাকুরপাড়ার গাংকান্দার ইউনুস মোল্লার ছেলে ইকবাল মোল্লা (৪০), ছয়আনি মাসারকান্দার কুটি সিকদারের ছেলে আসাদ সিকদার (৪৫), ছয়আনি মধ্যিকান্দার মকসেদ মীনার ছেলে আলমগীর মিনা (৫০), নবেদ মোল্লার ছেলে বক্কার মোল্লা (৫০)।
ছয়আনি খারদিয়ার দিঘীকান্দার রব মোল্লার ছেলে ফারুক মোল্লা (৩৮), বাদশা মোল্লার ছেলে রুহুল মোল্লা (৩৫), রতন মিয়ার ছেলে কালা মিয়া (৪৫), দশআনি খারদিয়ার মিয়াপাড়ার কালু খন্দকারের ছেলে কিরামত আলী (কিম্বত) খন্দকার (৪৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্র ছোরা, চাকু, চাপাটি, রামদা ও সরকি দিয়ে বাবলু ফকিরকে কুপিয়ে যখম করে এবং কাঠ, বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে প্রচন্ড আঘাত করে এবং কিল ঘুষি পা দিয়ে আঘাত করে এতে এক পর্যায়ে বাবলুকে মৃত্যুশয্যায় রেখে সকলে চলে যায়। পরে হাট বাসী ও পুলিশের সহায়তায় স্থানীয়রা তাকে বোয়ালমারী হসপিটালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতির কারণে তাকে বোয়ালমারী হসপিটাল থেকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, এখন সে ফরিদপুর চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক দলীয় পদের ও শক্তির জোর দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গা বিভিন্নভাবে নানান রকমের অপকর্ম মাদক কারবারি, চোরাকারবারি, জবরদখল, যখন-তখন যাকে তাকে মানহানি ও বিভিন্ন অসামাজিক রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকান্ডে তারা তৎপর হয়ে উঠেছেন এবং তাদের কোনভাবেই প্রশাসনিক সহযোগিতায় ও দমানো যাচ্ছে না বলে স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন।
স্থানীয় সাধারণ জনগণ তাদের অন্যায়, অবিচার ও জুলুম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা আশা করছেন।
তাদের অতর্কিত হামলা যারা ক্ষতিগ্রস্ত ও আঘাতপ্রাপ্ত হয় তারা যদি থানা পুলিশের সহযোগিতা কোন মামলা করতে যায় বা করে তাদেরকে আত্ম ভয়ে বাড়ির বাইরে পলাতক থাকতে হয়। পরবর্তীতে মামলা না উঠানো পর্যন্ত কোনোভাবেই তাদেরকে বাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয় না।
খবর নিয়ে জানা যায়, বড়খারদিয়া গ্রামের ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা আশি (৮০) বছরের এক বয়োজ্যেষ্ঠ (একাধিক বার ষ্টোক রোগে আক্রান্ত) ব্যক্তিকে (১০ এপ্রিল) উক্ত দলীয় সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের লোকজনগুলো তাকে বড়খারদিয়া বাজারের একটি টি স্টলের থেকে ডেকে নিয়ে বাজার ভরা লোকজনের সামনে খুব মর্মান্তিকভাবে মানহানি করেন। এতে ওই ব্যক্তি খুব অপমানিত বোধ করেন। এবং হতাশাগ্রস্থ হয়ে তিনি প্রশাসন একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তার এই অপমানের জোর বিচার দাবি জানান তিনি।